শাক-সবজির উপকারিতা


শাক-সবজির উপকারিতা

আজকাল আমরা দেখতে পাই আমাদের সমাজের প্রায় প্রতিটি মানুষ অসুস্থ। বিভিন্ন রোগে সমাজের মানুষ আক্রান্ত। এর প্রধান কারণ হলো মানুষের খাদ্যাভাস। আমরা খাবার সময় বাচ-বিচার করিনা কোন খাওয়া যাবে কোনটা খাওয়া যাবে না। কোন খাবার আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী এর কোন খাবার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর এটা আমরা এক বারের জন্যও চিন্তা করি না। 

 অথচ আমরা খাবার বিষয়ে যদি একটু সচেতন হই তাহলে আমরা সুস্থ সবল জীবন যাপন করতে পারবো। এই তালিকায় আপনারা শাক সবজির রাখতে পারেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক শরীর সুস্থ রাখতে শাক-সবজির উপকারিতা। তার সাথে জেনে নেব কোন শাকে কি ভিটামিন আছে-


লাল শাক

লাল শাক আপনার চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং পেটের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে। সাধারণত লাল শাক স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবারের অংশ হিসেবে পরিচিত। লাল শাক অনেক স্বাস্থ্যকর। এটা মূখ্যতঃ শিকড় এসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফোলেট, পটাশিয়াম, আয়রন এবং অন্যান্য খনিজগুলির উৎস। লাল শাক ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান ও অন্যান্য অসুস্থতা প্রতিরোধী উপাদানের জন্য পরিচিত। এটি গুণগতভাবে সমৃদ্ধ এবং পুষ্টিকর। লাল শাকে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে থাকে। লাল শাকে কোলোন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে তোলার সাথে সাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তাছাড়া এটি পেটের ব্যথা ও ত্রাসে সাহায্য করতে পারে এবং পাচনশক্তির সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এটি একটি পুষ্টিকর সবজি হিসাবে পরিচিত। এজন্য আপনি নিয়মিত লাল শাক খেতে পারেন।


পালং শাক

পালং শাক একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর শাক। পালং শাকে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি অনেক পরিমাণে থাকে। পালং শাকে নিয়মিত আমলানোর ফলে নির্মিত অটোমেল ওয়ার্ড দ্বারা ক্যান্সারের জন্য সুরক্ষা  প্রতিষ্ঠা করে।  পালং শাকে প্রতিষ্ঠাত্মক প্রভাব রয়েছে যেমন রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা, অস্থিমজ্জা স্বাস্থ্য উন্নত করা ইত্যাদি। এটি খেলে আপনার কম ক্যালোরি ও উচ্চ প্রোটিনের কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। পালং শাকে অন্যান্য সবজি সম্পর্কে আমন্ত্রণ বেশি প্রতিরোধ করতে পারে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তাই আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে পালং শাক খেতে পারে।

 

মূলা শাক

আপনি মূলা শাকের অনেক উপকারিতা পাবেন। প্রতিদিন না হলেও অনন্ত সপ্তাহের মধ্যে দু-একদিন আপনার খাবার তালিকায় এই শাকটি রাখতে পারেন কারণ, এটা পুষ্টিকর, ভিটামিন ও খনিজগুলি অন্যত্রের সঙ্গে পূরণ করতে সহায়তা করে। এটি ভিটামিন, খনিজ, ফোলাট, আন্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পোটাসিয়াম, আইরন, ম্যাগনেসিয়ামসহ আরো অনেক উপাদান রয়েছে। মূলা শাক ফাইবারের উৎস হিসাবে আপনার শরীরে কাজ করবে। নিয়মিত মূলা শাক খেলে আপনার হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। এছাড়াও এই শাক আপনার শরীরের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও আরো অনেক উপাদান রয়েছে এই মূলা শাকে যা আপনার শরীরের অনেক ক্ষয় পূরণ করতে সক্ষম।

পুঁই শাক

পুঁই শাক চিনিনা এমন একজনকে হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। অত্যন্ত উপকারী একটি শাক হলো পুঁই শাক। এই শাক ভিটামিন, ফাইবার এবং আমিষে ভর্তি। এটি খেতে আপনার শরীর পুষ্টিতে সমৃদ্ধ হবে এবং প্রতিটি পরিবারের স্বাস্থ্য সংরক্ষণে সাহায্য করবে। পুঁই শাকে অনেক প্রকার অ্যঅন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় এটি খেলে আপনার হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে এবং আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে। পুঁই শাকে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল ও ফাইবার আছে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উপরোক্ত গুণাবলি বিবেচনা করলে আপনার পুঁই শাক সপ্তাহে অনন্ত ২-৩ দিন রাখতে হবে।


সজিনা

সজিনা একটি গুণমুখী ও প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। সজিনার মধ্যে অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। এটি জ্বর, আবহাওয়া বদল, পেট সমস্যা এবং অনেক অন্যান্য সমস্যায় ঔষধ হিসেবে কাজ করে। এটি খাবার ফলে আপনার বিভিন্ন ব্যাথার উপশম হবে। তাছাড়া সজিনা ত্বকের সুস্থতা উন্নত করে এবং ত্বক সমস্যার সাথে যোগাযোগ করতে সহায়ক হিসাবে কাজ করে। এটি ত্বকের চিকিৎসার জন্য অনেক উপকারী হিসাবে ভূমিকা পালন করে। সজিনাতে কিছু মাত্রায় প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন সরবরাহ করতে পারে, যেমন ফোলেট, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ইত্যাদি। এছাড়া এর বীজ থেকে তৈল উৎপন্ন করা হয়।

 

পুদিনা পাতা
আমরা সবাই পুদিনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি জানি। পুদিনা পাতা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এটি বিভিন্ন খাবারে মেখে খেতে পারেন বা জুস হিসাবে খাবারে অথবা পানিতে মিশিয়ে খাবারে অথবা ড্রিংকে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি আমিনো অ্যাসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ফোলিয়েটের অধিক উপাদানে সমৃদ্ধ। আপনি যদি পুদিনা পাতা সহজেই খেতে পারেন তাহলে আপনার পেটের স্থিতি স্থাপনে সাহায্য করতে পারে এবং পেটের সমস্যাগুলি মোকাবিলা করতে সাহায্য করতে পারে।
তাছাড়া পুদিনা পাতা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে একটি উন্নত করতে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করতে পারে। পুদিনা পাতা ব্যথা এবং ¯্রাব নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে, যেমন মাথা ব্যাথা, পেটের ব্যথা, গলা ব্যথা ইত্যাদি। এছাড়াও পুদিনা পাতা আপেক্ষিকভাবে সুস্বাদু এবং পোষণের সমৃদ্ধ উপাদানের জন্য এটি একটি প্রিয় উদ্ভিদ। তাই সবার জন্য এটি একটি উত্তর খাবার।


ব্রোকলি

ব্রোকলি একটি খুবই পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর সবজি। এটি একটি উপকারি সবজি- এতে রয়েছে ক্যারটিন, ভিটামিন সি, ফোলেট, ও ফাইবার। যা খাওয়ার আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ব্রোকলিতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্টস আপনার হৃদরোগ ও ক্যান্সার রোগের ঝুঁকি কমানোতে সাহায্য করতে পারে। ব্রোকলিতে থাকা ফাইবার ও অন্যান্য সংঘটক ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ব্রোকলিতে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন কে ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান থাকায় এটি অস্থি ও দাঁতের স্বাস্থ্যোর জন্য ভালো। এছাড়াও ব্রোকলিতে থাকা ফাইবার ও প্রোটিন আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

 

বাঁধাকপি 

বাঁধাকপি আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি। বাঁধাকপি সবজির গুণাগুণ অনেক বিশাল এবং গুণগতভাবে পুষ্টিকর। এটি আপনার শরীরে অনেক ধরনের পুষ্টি সরবরাহ করবে।

বাঁধাকপি ভিটামিন সি এর অন্যতম একটি উৎস। বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এটি আপনার রক্তের গর্তে হেমোগেøাবিন তৈরি করতে সাহায্য করে। তাছাড়া বাধাকপি গর্ভকালীন মহিলাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি। এটি শিশুর জন্য মারাত্মক কাজ করে থাকে। বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা হাড় ও দাঁতের জন্য গুরুত্বপূূর্ণ। বাঁধাকপি অনেক পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগ করে, যা মুক্ত  রাধিকারী প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডিজেন্টিভ সিস্টেমের স্বাভাবিক কাজে সাহায্য করে। সুতরাং আপনাদের উচিত নিয়মমাফিক বাঁধাকপি খাওয়া।

কলমি শাক

কলমি শাক খুবই সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর এটি বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান যেমন আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন এবং ফোলেট সহ অনেক গুণাবলি ধারণ করে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, নিয়মমাফিক প্রতিদিন খেতে পারেন এটি কলমি শাকের বিশেষ গুণাবলি ব্যতিত রক্তনালিকা ডাইয়েটিক সমস্যার জন্য খুবই উপকারী হতে পারে এটি প্রতিদিনের সবচেয়ে কম কেলোরি ধারণ করে এবং প্রাকৃতিক ফাইবার এবং প্রোটিনের ভাল উৎস হিসাবে পরিচিত কলমি শাকে ভিটামিন কে প্রোটিনের মাত্রা উচ্চ হয়ে থাকে, যা কাঁচা মাংসের প্রায় সময়ের চারগুন অধিক হয়ে থাকেএছাড়াও, এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এবং চর্বি কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করতে পারে

শেষ কথা
আমাদের প্রতিদিন নিয়মমাফিক শাক-সবজি খাওয়া একান্ত জরুরী।

Post a Comment

0 Comments